ফতুল্লা থানার এসআই শামীম আমাকে রোজা রাখতে দেয়নি, ঝুলিয়ে পিটিয়েছে : মানববন্ধনে ভুক্তভোগী

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মামুন হত্যার ঘটনায় এস আই শামীম কর্তৃক ট্রাক ড্রাইভার জুয়েলকে ফাঁসিয়ে নির্যাতন ও ইলেকট্রিক শক দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২২ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ট্রাক চালকবৃন্দরা এই এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে প্রতিবাদ জানায়। এ সময় তার পুলিশ কর্মকর্তার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

মানববন্ধনে ট্রাক চালক ও ভুক্তভোগী মো. জুয়েল বলেন, গত ১৬ মার্চ আমি আমার বোনের বাড়ি শরীয়তপুর বেড়াতে গেলে ফতুল্লা থানার এসআই (উপ-পরিদর্শক) শামীম হোসেন মামুন হত্যাকাণ্ডের (মামলা নং- ৯(২)২৫) ঘটনায় আমাকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। পথিমধ্যে গাড়িতে আমাকে লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধর করে এবং মামুন হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে এ বিষয়ে ‘আমি কিছু জানিনা’ বললে সে আমার ওপর শারিরীক নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে আমাকে থানায় নিয়ে হাত-পা বেঁধে ফের মারধর করে এবং আমার চেহারায় মরিচের গুরো দিয়ে দেয়। এমনকি তিনি আমার পুরুষাঙ্গে বিদ্যুতিক শক দিয়ে আমাকে আদালতে বলতে বলে, ‘আক্তার ও সুমন আমাকে দিয়ে এ হত্যার কাজ করিয়েছে।’ কিন্তু আমি এ কাজ করতে রাজি হইনি এবং আক্তার-সুমনকে চিনিনা। তাছাড়া এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সাথেও জড়িত নই।

 

তিনি আরও বলেন, আমি জানিনা এস আই শামীমের সাথে আমার কি শত্রুতা। সে রিয়াদ চৌধুরীর লোক। সে যখন আমাকে ফরিদপুর থেকে ধরে এনে বেধড়ক মারধর করে। মারধরের সময় এস আই শামীম আমাকে বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে হলে তোকে গুলি করে মেরে ফেলতাম।’ আমার মনে হয় সে আওয়ামী লীগের দোসর। সে আমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে। আমাকে ঝুলিয়ে পিটিয়েছে। এমনকি সে আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে চেয়েছিল। রমজান মাসে সে আমাকে রোজ রাখতে দেয়নি। শুধু পানি খেয়ে রোজা রাখতে হয়েছে। রোজা অবস্থায় সে আমাকে মারধর করতো। এমনকি আমাকে কোর্টে আনা হলে আমার আত্নীয় স্বজনদের সাথে সে দেখা করতে দেয়নি।

এ সময় ট্রাক চালক মো. দেলোয়ার, রাব্বি, মোখলেছ, জসিম, সুমন, মনির, ট্রাক চালক সহকারী মো. সাগর, হৃদয়, আলামিন সহ প্রমুখ।

জানা গেছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ফতুল্লায় রেললাইনের ওপর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মামুন হোসাইনকে (৪০) গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার একদিন পর নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় মো. জুয়েলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলেন।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ট্রাক চালক মো. জুয়েল।

ফেসবুক থেকে

এই মাত্র পাওয়া

সর্বশেষঃ