সিদ্ধিরগঞ্জে ১৫ দিনেও চিহ্নিত হয়নি স্কুলছাত্রী স্বপ্না হত্যার ঘাতক, প্রতিবাদে মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ৮ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী স্বপ্না হত্যার আসামী গ্রেফতার ও সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে তার পরিবার ও এলাকাবাসী।

বৃহস্পতিবার  (১৬ মে) সকাল দশটায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা দ্রুত স্বপ্না হত্যাকারীকে গ্রেফতারের দাবি, সুষ্ঠু বিচার ও নিরপরাধ কাউকে হয়রাণী না করার দাবি করেন।   নিহত স্বপ্নার বাবা বলেন, আজকে হত্যার ১৩/১৪ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে।

এখনো হত্যাকারীকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এই মানববন্ধনের মাধ্যমে আমি দাবি করছি যে, সঠিক হত্যাকারীকে শনাক্ত করে তাকে আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।  নিহতের মা বলেন, আর কারো সন্তান যেন এভাবে হত্যার শিকার না হয়, আর কোন মা-বাবার বুক খালি না হয়, প্রশাসনের কাছে সেই দাবি করছি। সেই সাথে প্রশাসন যেন দ্রুত সুষ্ঠু তদন্দের মাধ্যমে আমার মেয়ের হত্যাকারীর বিচার করে, সেই দাবি জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকা থেকে গত ২ মে নিখোঁজের তিন দিন পর উদ্ধার করা হয় স্কুলছাত্রী স্বপ্নার বস্তাবন্দি অর্ধগলিত লাশ। লাশটি উদ্ধার হয় স্বপ্নাদের বাড়ির সীমানা ঘেঁষা একটি পরিত্যক্ত জমি থেকে। ওই স্থান থেকে স্বপ্নাদের বসতঘরের দূরত্ব অনুমান ১০ মিটার। লাশ উদ্ধারের দুই দিন পর ৪ মে নিহতের মা শাহিনুর আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি দিয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও স্বপ্নার ঘাতককে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। তবে ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক শওকত জামিল। এদিকে ঘটনার পর পুলিশ নিহত স্বপ্নার বাবা দেলোয়ার হোসেন খোকনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়।

ঘটনার পর থেকে মামলা দায়েরের পরদিন পর্যন্ত তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। প্রথমদিকে স্বপ্না হত্যায় সন্দেহের তীর তার দিকেই ছিল। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করায় শেষ পর্যন্ত তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল স্বপ্না নিখোঁজ হয়। কিন্তু বিষয়টি কেউ জানত না। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায়ও এ ব্যাপারে জিডি করেননি তার বাবা-মা। তবে লাশ উদ্ধারের দিন স্বপ্নার বাবা বলেন, ৩০ এপ্রিল থেকে তার মেয়ে নিখোঁজ ছিল। তার তিন দিন পর বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত জায়গা থেকে বস্তাবন্দি অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের ঘর থেকে লাশ উদ্ধারের স্থান প্রায় ১০ মিটার দূরে।

যে স্থানে স্বপ্নার লাশ পাওয়া গেছে, তার পাশেই তার দাদির পরিত্যক্ত একটি ঘর আছে। দাদির মৃত্যুর পর সেই ঘরটি অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত। তবে ঘরটিতে একটি খাট, তার ওপর তোশক ও কিছু সোফার ফোম রয়েছে। সেই ঘরটির জানালায় একটি গ্রিল লাগানো ছিল। সেটি একটি সিটকিনি দিয়ে আটকানো। চাইলে এটা খুলে যে কেউ বাইরে যেতে পারে। এদিকে ৩০ এপ্রিল স্বপ্নার বাড়ি থেকে বের হওয়া এবং বাড়িতে প্রবেশের একটি সিসিটিভি ফুটেজ এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। তাতে দেখা যায়, ৩০ এপ্রিল সকাল ৬টা ৩৮ মিনিট ১৯ সেকেন্ডে স্কুল ইউনিফর্ম পরে কাঁধে একটি ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে হেঁটে বের হয়ে যাচ্ছে স্বপ্না। প্রায় তিন ঘণ্টা পর সকাল ৯টা ৪৮ মিনিটে রিকশায় করে বাড়ির সামনে এসে নামে। পরে রিকশা ভাড়া দিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে যায়। এরপর এই পথ দিয়ে স্বপ্নাকে আর বের হতে বা প্রবেশ করতে দেখা যায়নি।

ফেসবুক থেকে

এই মাত্র পাওয়া

সর্বশেষঃ